এআই কার্বন নিঃসরণ: টেকসইতার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন | ChatGPT-এর মাসিক কার্বন ফুটপ্রিন্ট ২৬০টি transatlantic flights সমান

বর্তমান সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দ্রুত অগ্রগতি যেমন মানুষের জীবন সহজতর করছে, তেমনি পরিবেশের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাগুলো থেকে জানা যাচ্ছে, এআই প্ল্যাটফর্মগুলোর কার্বন নিঃসরণ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে। উদাহরণস্বরূপ, ChatGPT প্রতি মাসে ২৬০,০০০ কিলোগ্রামের বেশি CO2 উৎপন্ন করছে, যা নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডনের মধ্যে ২৬০টি ফ্লাইটের সমান।

ChatGPT এবং এআই-র পরিবেশগত প্রভাব

ChatGPT-এর মতো প্ল্যাটফর্মে একক পৃষ্ঠা লোড করার সময় গড়ে ১.৫৯ গ্রাম CO2 নিঃসরণ হয়। তবে প্রতি মাসে এর ১৬৪ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর বিশাল সংখ্যা এই ছোট নিঃসরণকে একটি বৃহৎ পরিবেশগত প্রভাবের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, কিছু ছোট এআই প্ল্যাটফর্ম যেমন Rytr বা Spellbook প্রতি পৃষ্ঠায় বেশি কার্বন নিঃসরণ করে—তাদের ক্ষেত্রে এই হার যথাক্রমে ১০.১ গ্রাম এবং ৬.৫ গ্রাম।

এই সমস্ত নিঃসরণের মূল কারণ হলো এআই পরিচালিত ডেটা সেন্টারের উচ্চ শক্তি খরচ। ২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের ডেটা সেন্টার এনার্জি রিপোর্ট অনুযায়ী, ডেটা সেন্টারের শক্তি ব্যবহার ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হয়েছে। এআই এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়তে থাকলে, ২০২৬ সালের মধ্যে শক্তি ব্যবহারে আরও দ্বিগুণ বৃদ্ধি প্রত্যাশিত।

এআই টেকসই করার উদ্যোগ

পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তি শিল্পে ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেমন:

  • কোড অপ্টিমাইজেশন: অপ্রয়োজনীয় প্রসেসিং কমানো।
  • উন্নত কুলিং পদ্ধতি: লিকুইড কুলিং সিস্টেমের ব্যবহার।
  • পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি: সৌর ও বায়ু শক্তির মতো সবুজ জ্বালানির ব্যবহার।

এছাড়াও, বাইডেন প্রশাসন একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছে, যেখানে ডেটা সেন্টারের টেকসই উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে।

ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ

এআই প্রযুক্তির অব্যাহত উন্নয়ন এবং এর সাথে পরিবেশগত দায়িত্ব পালনের চ্যালেঞ্জ প্রযুক্তি শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। যদিও এআই আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান দিতে সক্ষম, তবুও এর কার্বন নিঃসরণ দীর্ঘমেয়াদী টেকসইতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

এই প্রভাব কমানোর জন্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে অবশ্যই টেকসই সমাধান বাস্তবায়ন করতে হবে। ব্যবহারকারীরাও এআই প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও সচেতন ভূমিকা পালন করতে পারেন। ভবিষ্যতে, শক্তি-সাশ্রয়ী কম্পিউটিং এবং সবুজ প্রযুক্তি গ্রহণই আমাদের পরিবেশের সুরক্ষায় মূল চাবিকাঠি হতে পারে।

transatlantic flights ফ্লাইট হলো এমন একটি ফ্লাইট, যেখানে একটি বিমান আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করে ইউরোপ, আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে উত্তর আমেরিকা, লাতিন আমেরিকা বা এর উল্টো পথে যাতায়াত করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts